কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে ঘূর্ণিঝড়ে সহস্রাধিক বাড়ীঘর মাটিতে মিশে গেছে। আহত হয়েছে প্রায় অর্ধশত মানুষ। খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছে গৃহহীন মানুষগুলো। ঘূর্ণিঝড়ে শতাধিক হেক্টর পাকা বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে শতশত গাছপালা।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে এই প্রলয়ঙ্করী ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার কালিগঞ্জ, বল্লভেরখাস, বেরুবাড়ী, নারায়ণপুর ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় ইউনিয়নের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বয়ে যায়। ঘটনার আকষ্মিতকায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বেরুবাড়ী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামসহ ৩ শতাধিক বাড়ীঘর মাটিতে মিশে যায়। শুক্রবার সারাদিন নারী ও শিশুরা খোলা আকাশেই অবস্থান করছিল।
প্রাক্তন চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম জানান, খেটে খাওয়া মানুষগুলো ঘর হারিয়ে খোলা আকাশে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
দ্বীপচর নারায়ণপুর ইউনিয়নে শতাধিক বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কালিগঞ্জ ইউনিয়নের পাতালীপাড়া, ভেলকার চর, কাপালীপাড়া চরে ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি একেবারে ভেঙে পড়ে গেছে। ভেলকার চরের আকবর আলী জানান, আমার থাকার ঘরসহ ৪টা ঘরই ধ্বসে পড়েছে। কালিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নুর ইসলাম জানান, ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে লোকজন করুণ অবস্থায় আছে। খাবার নাই। থাকার জায়গা নাই। আমরা তালিকা করছি।
বৃহস্পতিবার রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যায় আকস্মিক ঘুর্ণিঝড়ে সহস্রাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশত মানুষ। শতাধিক হেক্টর জমির ফসল নস্ট হয়ে গেছে। শতশত গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকা পরিদর্শণ করেছেন
বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের লুছনী, কুটি বামনডাঙ্গা, চরলুছনীতে শতাধিক ঘরবাড়ি পরে গেছে। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের চারটি গ্রামে অর্ধশত ঘরবাড়ী লন্ডভন্ড হয়েছে। বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সহস্রাধিক গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। শতশত হেক্টর জমির ইরি বোরো পাকা ধান, পাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে আশ্রয়ে খোজে ছোটাছুটি করতে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে জানান, শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মধ্যে বেরুবাড়ী ও কালিগঞ্জ ইউনিয়নে পরিদর্শন করেছি। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রায় ৫টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ব্যাপক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের দ্রুত তালিকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে
শেয়ার করুন